• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মৃত্যুহীন দিন কেটেছে বীরগঞ্জের ঘোষপাড়া গরু খামারে 

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩  

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গত ৪ডিসেম্বর হতে আজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত দুইটি খামারের ৭০টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন একের পর এক গবাদি পশুর মৃত্যু হলেও প্রাণিসম্পদ  দপ্তরের নিবিড় পর্যক্ষেণে গত রবিবার মৃত্যুহীন দিন কেটেছে ঘোষপাড়া গরু খামারে।

মৃত্যুহীন দিন ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের কান্না থামিয়ে দিলেও ৭০টি গবাদি পশু মৃত্যুর ঘটনায় হতাশায় মুচড়ে পড়েছেন খামারের মালিক। ৭০টি গবাদি পশুর মৃত্যুতে কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই মুহুর্তে সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ খামারি গোপাল ঘোষ।

উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের প্রাননগর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মৃত গীরেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গোপাল ঘোষ ও গোবিন্দ ঘোষের গরু খামারের শতাধিক গরু আক্রান্ত হয়। ৭ডিসেম্বর হতে একের পর এক আক্রান্ত গরু মারা যেতে থাকে। ঘটনার পর থেকে ১৬ডিসেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয় ২টি মহিষসহ খামারের মোট ৭০টি গবাদি পশু।

এদিকে এতো সংখ্যক গবাদি পশুর মৃত্যুতে খামারিদের কান্নায় শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করে পুরো গ্রাম জুড়ে। তবে নমুন সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষার পাঠানো হলো এখন পর্যন্ত জানা যায়নি গবাদি পশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। অজানা রোগে এতোগুলি গবাদি পশুর মৃত্যুর ঘটনা এটি বাংলাদেশে প্রথম বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

সংবাদ পেয়ে ৯ডিসেম্বর তাৎক্ষণিক ভাবে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শামিমা বেগমের নেতৃত্বে ৭সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে অবস্থান গ্রহণ করে এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসাপাতাল ।

এরপর ১০ডিসেম্বর জেলা প্রানিসম্পদ দপ্তর জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি অফিসার ডাঃ আশিকা আকবর তৃষার নেতৃতত্বে ৬সদস্যের মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেয়।

গবাদি পশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রানি সম্পদ অধিদপ্তর ঢাকা ৪সদস্যের গঠিত রোগ অনুসন্ধান টিমের সদস্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ঢাকা ডাঃ ফয়সল তালুকদার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদুল হায়াত, ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি মোঃ জাকিউল হাসান গত ১২ডিসেম্বর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নমুনা সংগ্রহ করেন। এরপর গত ১৪ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট সাভার উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আবু ইউসুফ,ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবির এবং ল্যাব টেকনিশিয়ান মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং নমুনা সংগ্রহ করেন।

প্রাথমিক ভাবে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রানিসম্পদ দপ্তরের ধারণা। তবে কি রোগে এতো গবাদি পশুর মৃত্যু এবং এর প্রকৃত কারণ এখন পর্যন্ত অজানা রয়ে গেছে।

মৃত গবাদি পশুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডে অবস্থিত কেন্দ্রিয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে আগামী সোমবার রোগের রিপোর্ট পাওয়াবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওসমান গণি।

তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রিপোর্ট পাওয়া গেলে জানা যাবে গবাদি পশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। জাতীয় দিবসের ছুটির কারণে রিপোর্ট পেতে একটু সময় লাগছে। তবে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং মেডিকেল টিমের দিন-রাত সেবার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রবিবার খামারে মৃত্যুহীন দিন কেটেছে। এটি প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বড় সাফল্যে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –